পণ্য ডেলিভারি করার সময় কোন কোন বিষয়গুলি খুব সতর্কতার সাথে করবেন

পণ্য ডেলিভারি করার সময় কোন কোন বিষয়গুলি খুব সতর্কতার সাথে করবেন
ই-কমার্স বলেন আর ফেইসবুক কমার্স বলেন সব জায়গাতেই পণ্য গ্রাহকের কাছে ভালো মতো পৌঁছানো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । পণ্য সঠিক ও সুন্দর ভাবে ডেলিভারি করতে পারলে গ্রাহক পর্যায়ে আপনার রেপুটেশন অনেক বেড়ে যায় । আর এই রেপুটেশন আপনার বিজনেসকে বুস্ট করে এক্সট্রা পর্যায়ে । তাই অবশ্যই ডেলিভারি বিষয়টি আপনারা যারা বিজনেস করছেন তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
১. অর্ডার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
পন্য ডেলিভারীতে পাঠানোর আগে আপনি অবশ্যই দেখে নেবেন। অর্ডারটি সঠিক কিনা? এমনকি এটি চূড়ান্ত অর্ডার কিনা? কিংবা কাস্টমার ইতোমধ্যে অর্ডারটি বাতিল করেছেন কিনা? কাস্টমারকে ফোন করে যদি জিজ্ঞেস করা যায় তিনি অর্ডারটি গ্রহণ করতে প্রস্তুত কিনা তাহলে নিশ্চিন্ত হয়ে পরবর্তী ধাপে যাওয়া যায়।
২. ঠিকানা পূর্ণ করুন ও যাচাই করুন
অনেক সময় কাস্টমার পুর্ণ ঠিকানা না দিয়ে অর্ধেক কিংবা অপূর্ণ ঠিকানা দিয়ে থাকেন। এতে ডেলিভারী দিতে গেলে নানা সমস্যা দেখা যায়। তাই ফোন দেয়ার মাধ্যমে কাস্টমার সঠিক ব্যক্তি কিনা সেটা যেমন ভেরিফাই করা যায়। আবার তার কাছ থেকে পুরো ঠিকানা নিশ্চিত করা যায়। সম্ভব হলে গুগল ম্যাপে যাচাই করে ঠিকানা সঠিকতা জেনে নেয়া যায়। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে না হলেও সন্দেহভাজন ক্ষেত্রেতো তা অবশ্যই করা যায়।
পূর্নাঙ্গ ঠিকানা সঠিক ফোন নাম্বার প্রয়োজনে একটি বিকল্প ফোন নাম্বার দিয়ে দিতে পারেন।
৩. পন্যের মান দেখে নেয়া
আপনি পন্যের অর্ডার পেয়েছেন। এখন ডেলিভারী দিলে কাস্টমার খুশি হয়ে আপনার টাকা দিয়ে দেবে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। আপনি অবশ্যই আরেকবার যাচাই করে নেবেন সঠিক পন্যটি আপনি ডেলিভারী দিচ্ছেন কিনা। এর মেয়াদ কিংবা কার্কারিতা রয়েছে কিনা? সাইজ কিংবা কালার ঠিক আছে কিনা? ভাঙ্গা কিংবা ভুল পন্য প্যাকের মধ্যে রয়েছে কিনা সম্ভব হলে সেটাও বুঝে নিন। কারণ ভুল ও খারাপ পন্য দেয়ার জন্য কাস্টমার খেপে যেতে পারে, মামলা করতে পারে এমনকি আপনার ব্রান্ডের নামে ফেসবুকে বদনামও করতে পারে।
৪. সঠিক প্যাকিং নিশ্চিত করা
আপনি সঠিক পন্য গুনমান যাচাই করে দিলেন। কিন্তু সঠিক প্যাকিং না থাকার কারণে এটি খোয়া গেল। কিংবা ভেঙ্গে গেল। কিংবা ভিজে গেল। কাস্টমার অখুশি হলো কিংবা প্রোডাক্টসটি গ্রহণ করতে অখুশি জানালো এতে করে কাস্টমারের সাময়িক সমস্যা হলেও আপনি কিন্তু স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেন কারণ এতেকারে কাস্টমারের কাছে আপনার আস্থাটা নষ্ট হয়ে গেল। এভাবে আপনার ব্যবসায় কিন্তু খারাপ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে।
৫. সঠিক ডকুমেন্টেশান
আপনি একজন ভালো ও সৎ নীতিবান ব্যবসায়ী তাই আপনি প্রতিটি কাজ সঠিকভাবে করেছেন। কিন্তু আসলে সেটার কোনো প্রমাণ আপনার কাছে নেই। কাস্টমার ঠিক কত তারিখে কখন অর্ডারটি করেছে। পরে এটা আবার কখন পরিবর্তন করেছে। কখন আবার গ্রহণ করতে চেয়েছে। এসব তথ্য আপনার কাছে থাকা চাই।
আবার শিপিং বা লজিস্টিক কোম্পানীর সাথে আপনার কি কি শর্তে কোন দামে চুক্তি হয়েছে। কাস্টমারের পন্য পাঠানোর শর্ত কি? কখন কুরিয়ার কোম্পানীর কোন স্টাফ এসে আপনার কোন পন্যটি কোন ঠিকানায় পাঠানার জন্য কয়টা বাগে গ্রহণ করেছিলো এটা আপনার জানা দরকার। এবং এসব দলিল প্রমাণ আপনার কাছে সংরক্ষিত থাকা উচিত।
৬. ডেলিভারী আপডেট নিন?
পন্য ডেলিভারী ম্যানকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিয়ে আপনি যদি মনে করেন আপনার দায়িত্ব শেষ। তা কিন্তু নয়। কারণ ব্যবসায়টা আপনার আর পন্যটাও। তাই সময় করে একটু খবর নিন। সেটা ডেলিভারী হলো কিনা? বা কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা? এমনকি আপনি কাস্টমারকেও ফোন করে জানতে চাইতে পারেন তিনি ঠিকভাবে পন্যটি বুঝে পেয়েছে কিনা?
৭. ফিনিশিং টাচ দিন
কাজটি খুব ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ যদিও খুব কম লোকই এই কাজটা করে থাকেন। এই ফিনিশিং টাচ হলো ফিনিশিং পয়েন্টগুলোকে পারতপক্ষে একটা ধন্যবাদ জানানো। যেমন ধরুন কাস্টমারকে একটা ধন্যবাদ জানানো যদি তিনি কোনো ঝামেলা ছাড়াই সঠিক সময়ে পন্যটি গ্রহণ করে থাকেন। একটি ধন্যবাদ সূচক ইমো দিন আপনার ডেলিভারী পার্টনারকে।
ডেলিভারীম্যানকেও দিতে পারেন বিশেষ ধন্যবাদ। মাস শেষে কয়েকজন ভালো ডেলিভারীবয়কে কোনে ট্রিট কিংবা গিফট দিতে পারেন হোক সে পার্সন আপনার কোম্পানীর নয়। এর পর থেকে আপনার ডেলিভারী সে খুব মনোযোগ দিয়ে করবে। এটা বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো বুদ্ধি। অবশ্য আপনার ডেলিভারী কোম্পানী যদি কাজ ও নিয়মের ব্যাপারে খুব প্রফেশানাল হয় তাহলে এর প্রয়োজন নাও থাকতে পারে।
???? আপনাকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি যদি আমাদের এই ছোট্ট উদ্যোগ আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে আমাদের কাজের স্পৃহা আরো বাড়িয়ে দিতে আপনারা বিশেষ ভূমিকা রাখবেন এবং সেই সাথে আপনার একটি শেয়ার হয়তো আপনার নিকটস্থ কারো জন্য একটি নতুন দরজা খুলে দিতে পারে । আপনারা সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, ধন্যবাদ সবাইকে ।